বরকতময় সে সত্তা যিনি আসমানে সৃষ্টি করেছেন বিশালকায় গ্রহসমূহ। আর তাতে প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ সৃষ্টি করেছেন।
কত প্রাচুর্যময় তিনি যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন[১] এবং ওতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।[২]
[১] بُرُوج শব্দটি بُرْج শব্দের বহুবচন। (এর আসল অর্থ হল প্রকাশ। রাশিচক্র নক্ষত্রমালার প্রাসাদ ও অট্টালিকার মত। আর তা আকাশে প্রকাশ ও স্পষ্ট হওয়ার কারণে 'বুরুজ' বলা হয়।) সালাফদের তফসীরে بُرُوج বলতে বড় বড় গ্রহ-নক্ষত্রকে বুঝানো হয়েছে। আর এই তফসীরে আয়াতের বাগধারায় অর্থ দাঁড়ায় যে, বরকতময় সেই সত্তা, যিনি আকাশে বড় বড় গ্রহ-নক্ষত্র, চন্দ্র ও সূর্য সৃষ্টি করেছেন। পরবর্তী যুগের তফসীরকারগণ জ্যোতিষীদের পরিভাষার (কল্পিত) রাশিচক্র অর্থ নিয়েছেন। যার সংখ্যা হল বারটি; মেষরাশি, বৃষরাশি, মিথুনরাশি, কর্কটরাশি, সিংহরাশি, কন্যারাশি, তুলারাশি, বৃশ্চিকরাশি, ধনুঃরাশি, মকররাশি, কুম্ভরাশি ও মীনরাশি। আর এই বারটি রাশি সাতটি বড় বড় গ্রহের কক্ষপথ; যাদের নামঃ মঙ্গল, শুক্র, বুধ, চন্দ্র, সূর্য, বৃহস্পতি ও শনি। এই সমস্ত গ্রহ উক্ত রাশিতে এমনভাবে অবস্থান করে যে, ওগুলো যেন তাদের জন্য সুবিশাল প্রাসাদস্বরূপ। (আইসারুত তাফাসীর)
[২] সূরা ইউনুসের ১০:৫ নং আয়াতের মত এ আয়াতেও প্রমাণ হয় যে, চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। সুতরাং বিজ্ঞানের এ কথা বহু পূর্বেই কুরআনে প্রমাণিত হয়েছে।
কুরআন 25:61
৬১-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে পুনরায় আল্লাহ তা‘আলা আরো কিছু ক্ষমতার কথা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা নভোমণ্ডলের নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন। এখানে নক্ষত্ররাজি দ্বারা উদ্দেশ্য হল (বড় বড় তারকারাজি)।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَا۬ءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيْحَ)
“আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা (তারকারাজি) দ্বারা।” (সূরা মূলক ৬৭:৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالسَّمَا۬ءِ ذَاتِ الْبُرُوْجِ)
“শপথ বুরূজ (প্রকাশ্য তারকারাজি)-বিশিষ্ট আকাশের।” (সূরা বুরূজ ৮৫:১) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَا۬ءِ بُرُوْجًا وَّزَيَّنّٰهَا لِلنّٰظِرِيْنَ)
“আমি আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং তা সুশোভিত করেছি দর্শকদের জন্য।” (সূরা হিজর ১৫:১৬)
আর তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপময় সূর্য ও জ্যোতিময় চন্দ্র। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللّٰهُ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا لا - وَّجَعَلَ الْقَمَرَ فِيْهِنَّ نُوْرًا وَّجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا)
“তোমরা কি লক্ষ্য করনি, আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে সাত আসমানকে স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন? এবং সেখানে চাঁদকে আলো ও সূর্যকে প্রদীপরূপে স্থাপন করেছেন?” (সূরা নূহ ৭১:১৫-১৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَا۬ءً وَّالْقَمَرَ نُوْرًا)
“তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন।” (সূরা ইউনুস ১০:৫)
অতঃপর তিনি বলেন, তিনি দিবা ও রাত্রিকে করেছেন একটি আরেকটির অনুগামী। অর্থাৎ দিন যায় রাত্রি আসে, আবার রাত্রি যায় দিন আসে। একটি অপরটির নাগাল পায় না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَسَخَّرَ لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَا۬ئِبَيْنِ ج وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ)
“তিনি তোমাদের (কল্যাণে) নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুগামী এবং তোমাদের (কল্যাণে) নিয়োজিত করেছেন রাত্রি ও দিবসকে।” (সূরা ইবরাহীম ১৪:৩৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لَا الشَّمْسُ يَنْۭـبَغِيْ لَهَآ أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ ط وَكُلٌّ فِيْ فَلَكٍ يَّسْبَحُوْنَ)
“সূর্যের সাধ্য নেই যে, সে চন্দ্রকে ধরে ফেলে এবং রাতও দিনের পূর্বে আসতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষে চলছে।” (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৪০)
আর এগুলো কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়, এগুলো একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই করে থাকেন।
সুতরাং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করতে হবে। তাঁকেই উপাস্য হিসেবে মানতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না।
২. সকল বস্তুর সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, অন্য কেউ নয়।
৩. বেশি বেশি করে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
কত প্রাচুর্যময় তিনি যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন[১] এবং ওতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।[২]
[১] بُرُوج শব্দটি بُرْج শব্দের বহুবচন। (এর আসল অর্থ হল প্রকাশ। রাশিচক্র নক্ষত্রমালার প্রাসাদ ও অট্টালিকার মত। আর তা আকাশে প্রকাশ ও স্পষ্ট হওয়ার কারণে 'বুরুজ' বলা হয়।) সালাফদের তফসীরে بُرُوج বলতে বড় বড় গ্রহ-নক্ষত্রকে বুঝানো হয়েছে। আর এই তফসীরে আয়াতের বাগধারায় অর্থ দাঁড়ায় যে, বরকতময় সেই সত্তা, যিনি আকাশে বড় বড় গ্রহ-নক্ষত্র, চন্দ্র ও সূর্য সৃষ্টি করেছেন। পরবর্তী যুগের তফসীরকারগণ জ্যোতিষীদের পরিভাষার (কল্পিত) রাশিচক্র অর্থ নিয়েছেন। যার সংখ্যা হল বারটি; মেষরাশি, বৃষরাশি, মিথুনরাশি, কর্কটরাশি, সিংহরাশি, কন্যারাশি, তুলারাশি, বৃশ্চিকরাশি, ধনুঃরাশি, মকররাশি, কুম্ভরাশি ও মীনরাশি। আর এই বারটি রাশি সাতটি বড় বড় গ্রহের কক্ষপথ; যাদের নামঃ মঙ্গল, শুক্র, বুধ, চন্দ্র, সূর্য, বৃহস্পতি ও শনি। এই সমস্ত গ্রহ উক্ত রাশিতে এমনভাবে অবস্থান করে যে, ওগুলো যেন তাদের জন্য সুবিশাল প্রাসাদস্বরূপ। (আইসারুত তাফাসীর)
[২] সূরা ইউনুসের ১০:৫ নং আয়াতের মত এ আয়াতেও প্রমাণ হয় যে, চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। সুতরাং বিজ্ঞানের এ কথা বহু পূর্বেই কুরআনে প্রমাণিত হয়েছে।
কুরআন 25:61
৬১-৬২ নং আয়াতের তাফসীর:
এখানে পুনরায় আল্লাহ তা‘আলা আরো কিছু ক্ষমতার কথা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তা‘আলা নভোমণ্ডলের নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন। এখানে নক্ষত্ররাজি দ্বারা উদ্দেশ্য হল (বড় বড় তারকারাজি)।
যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَا۬ءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيْحَ)
“আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা (তারকারাজি) দ্বারা।” (সূরা মূলক ৬৭:৫)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَالسَّمَا۬ءِ ذَاتِ الْبُرُوْجِ)
“শপথ বুরূজ (প্রকাশ্য তারকারাজি)-বিশিষ্ট আকাশের।” (সূরা বুরূজ ৮৫:১) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
(وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِي السَّمَا۬ءِ بُرُوْجًا وَّزَيَّنّٰهَا لِلنّٰظِرِيْنَ)
“আমি আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং তা সুশোভিত করেছি দর্শকদের জন্য।” (সূরা হিজর ১৫:১৬)
আর তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপময় সূর্য ও জ্যোতিময় চন্দ্র। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللّٰهُ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا لا - وَّجَعَلَ الْقَمَرَ فِيْهِنَّ نُوْرًا وَّجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا)
“তোমরা কি লক্ষ্য করনি, আল্লাহ তা‘আলা কিভাবে সাত আসমানকে স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন? এবং সেখানে চাঁদকে আলো ও সূর্যকে প্রদীপরূপে স্থাপন করেছেন?” (সূরা নূহ ৭১:১৫-১৬)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(هُوَ الَّذِيْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَا۬ءً وَّالْقَمَرَ نُوْرًا)
“তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন।” (সূরা ইউনুস ১০:৫)
অতঃপর তিনি বলেন, তিনি দিবা ও রাত্রিকে করেছেন একটি আরেকটির অনুগামী। অর্থাৎ দিন যায় রাত্রি আসে, আবার রাত্রি যায় দিন আসে। একটি অপরটির নাগাল পায় না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَسَخَّرَ لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَا۬ئِبَيْنِ ج وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ)
“তিনি তোমাদের (কল্যাণে) নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চন্দ্রকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুগামী এবং তোমাদের (কল্যাণে) নিয়োজিত করেছেন রাত্রি ও দিবসকে।” (সূরা ইবরাহীম ১৪:৩৩)
অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(لَا الشَّمْسُ يَنْۭـبَغِيْ لَهَآ أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ ط وَكُلٌّ فِيْ فَلَكٍ يَّسْبَحُوْنَ)
“সূর্যের সাধ্য নেই যে, সে চন্দ্রকে ধরে ফেলে এবং রাতও দিনের পূর্বে আসতে পারে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষে চলছে।” (সূরা ইয়াসীন ৩৬:৪০)
আর এগুলো কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়, এগুলো একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই করে থাকেন।
সুতরাং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই ইবাদত করতে হবে। তাঁকেই উপাস্য হিসেবে মানতে হবে।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না।
২. সকল বস্তুর সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, অন্য কেউ নয়।
৩. বেশি বেশি করে আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
No comments:
Post a Comment